Description

Tinsho Bochorer Jatra Shilper Itihas  :  Gouranga Prasad Ghosh

Publisher : Dey Book Store

তিনশো বছরের যাত্রা শিল্পের ইতিহাস  :  গৌরাঙ্গপ্রসাদ ঘোষ

সারাংশ :

যাত্রাশিল্পের ইতিহাস বলতে কী বুঝব? সাধারণ বিবেচনা বলে, কোন্ কোন্ পালা লেখা হয়েছে, কারা কারা যুক্ত ছিলেন তাদের সঙ্গে, পালাকার, নির্দেশক,দলের নাম, বিষয় বা প্রযোজনার টুকিটাকি তথ্য, এইটুকুই পাওয়া যাবে এই ধরনের বই থেকে। যাঁদের কথা কেউ বলে না এই শিরোনামে গৌরাঙ্গপ্রসাদ কিন্তু এমন অনেক কলাকুশলীর প্রসঙ্গ এনেছেন, প্রথাগত ইতিহাসে হয়ত যাদের জায়গা পাওয়ার কথা নয়। বিস্তৃত এইসব শিল্পীদের নাম এবং কাজের ধরন শুধু নয়, ঘনিষ্ঠ পরিচয়ের সূত্রে তাঁদের সংক্ষিপ্ত জীবনকাহিনী পর্যন্ত তুলে দিয়েছেন গৌরাঙ্গপ্রসাদ, যাকে আমি অন্তত এ বইয়ের অমূল্য সংযোজন বলে মনে করব। যাত্রাদলে বুকিং এজেন্ট, যাঁরা আমন্ত্রিত অভিনয়ের জন্য যোগাযোগের সেতু, রূপসজ্জাকর, পোশাক সরবরাহকারী, পরচুলনির্মাতা, বিজ্ঞাপনের দায়িত্বে থাকা কর্মী ইত্যাদি অজস্র খুঁটিনাটি বিষয় মাথায় রাখতে হয় সংগঠক বা মালিককে। তাঁদের মধ্যে সবাইকার কথা নিশ্চয় নয়, কিন্তু অনেকের কথা থেকে গেল গৌরাঙ্গপ্রসাদের এই বইয়ে, তার জন্যে আমরা তাঁকে কৃতজ্ঞতা জানাই।

মুছে যাওয়া এইসব মানুষের কথাই বইয়ের প্রধান বিষয় নয়, কিন্তু তবু এই প্রসঙ্গ দিয়েই যে লেখা শুরু করলাম তার কারণ পাঠক বুঝতেই পারছেন। গৌরাঙ্গপ্রসাদ মানবিক দিক থেকে দেখতে চেয়েছেন যাত্রাশিল্পের এই ইতিহাসকে, নিছক তথ্য এবং তত্ত্বানুসন্ধানীর চোখ দিয়ে নয়। তাঁর কাছে যাত্রাশিল্পের সঙ্গে জড়িতরা জীবন্ত মানুষ, নিছক বিশ্লেষণের উপকরণ নন। তাঁদের সুখ দুঃখ আনন্দ-বেদনার ভাগ তিনি নিজে নিয়েছেন, সে অভিজ্ঞতার ছাপ এ লেখাকে মায়াময় করে তুলেছে। কিন্তু তা বলে যাঁরা ইতিহাস খুঁজতে চাইবেন, গৌরাঙ্গপ্রসাদ তাঁদেরও হতাশ করবেন না। যাত্রা তার নির্দিষ্ট আকার পাবার আগে অনেকগুলি পর্বের মধ্যে দিয়ে গেছে, যেমনটা যে কোনো শিল্পের বেলায় হয়ে থাকে। গৌরাঙ্গপ্রসাদ সেই সব কটি সাহিত্য সংরূপ নিয়ে আলোচনা করেছেন, একেবারে চর্যাপদ থেকেই। তার ফলে তাঁর এই লেখা খানিকটা সংক্ষিপ্ত বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস হয়ে উঠেছে।